৭ দিনে মেদ কমানোর উপায় - মহিলাদের পেটের মেদ কমানোর উপায় ২০২৩
পেটের মেদ মানুষকে একটি বিব্রতকর অবস্থার সম্মুখীন করে। মেদ কমানোর উপায় অনেকেই সঠিক পদ্ধতি জানে না। আর তাই আজকে মেদ কমানোর উপায় এবং কিভাবে মেদ কমানো যায় সে সম্পর্কে এই আর্টিকেলে জানাবো। মেদ সাধারণত উচ্চ চর্বি যুক্ত খাবারে কেবল মেদ বাড়ায় না। উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার থেকে কেবল মেদ বৃদ্ধি পায়।
যাদের একবার শরীরে মেদ জমে তাদের জন্য এই মেদ কাটিয়ে তুলতে অনেক কষ্টকর হয়ে যায়। অনেকের মাঝে ভুল ধারণা যে যাদের শরীরে মেদ বা ভুঁড়ি বৃদ্ধি পায় তারা আর সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না। কিন্তু এই কথাটি সম্পূর্ণ ভুল কারণ মেদ কমানোর উপায় রয়েছে। তাহলে চলুন মেদ কমানোর উপায় সম্পর্কে জেনে নিই।
পোস্ট সূচীপত্রঃ মেদ কমানোর উপায় - মহিলাদের পেটের মেদ কমানোর উপায় ২০২৩
- মেদ কমানোর উপায়
- মহিলাদের পেটের মেদ কমানোর উপায়
- পেটের মেদ কমানোর সহজ ৫ ব্যায়াম
- ৭ দিনে মেদ কমানোর উপায়
- মেদ কমানোর খাবার
- মেদ কমানোর ঔষধ
মেদ কমানোর উপায়
বাড়তি ওজনের জন্য যেকোনো ধরনের হৃদ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। মেদ বেশি হওয়ার কারণে মানুষের জরায়ু প্রোটেস্ট এবং ক্যান্সারের সম্ভাবনা বেশি থাকে। এজন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অত্যাধিক ক্যালরিযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে। আজকে আমরা মেদ কমানোর নানা উপায় সম্পর্কে জানব-
আপনি যদি প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে লেবুর রস এবং একটু লবণ দিয়ে শরবত তৈরি করে খান তাহলে ভালো ফল পাবেন। সকালের নাস্তা তে অন্য খাবারের সাথে ফল খেলে পেটের চর্বি থেকে রেহাই পাওয়া যায় এছাড়া শরীর থেকে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দূর করে। আপনাকে অবশ্যই ভাত কম খেয়ে আটার তৈরি রুটি বেশি খেতে হবে। তরকারি রান্নার সময় দারচিনি, এলাচ, গুজরতি, আদা, কাঁচামরিচ বেশি ব্যবহার করতে হবে কারণ এগুলো শরীরে রক্তের করার মাত্রা কমিয়ে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আরো পড়ুনঃ ব্রণ দূর করার উপায় - ব্রণ দূর করার ঔষধের নাম বিস্তারিত জানুন
অনেকেই মিষ্টি খেতে বেশি পছন্দ করে থাকে, কিন্তু এই সকল মিষ্টি যে শরীরের ক্ষতি করে থাকে তা আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না। চিনি জাতীয় খাবার শরীরে বিশেষ করে পেট এবং উরুতে বেশি চর্বি জমে তাই চর্বি থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই চিনি জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে। আপনাকে অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে আশ জাতীয় খাদ্য যেমন শাকসবজি, আমরা, সাজনি, চালতা খেতে হবে। চর্বি জাতীয় খাবার ফাস্টফুড, সফ্টড্রিংকস ইত্যাদি খাবার অভ্যাস থেকে দূরে থাকতে হবে।
আপনি যদি বেশি রাত জেগে কাজ করেন তাহলে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় কারণ অসময়ের ঘুম আপনার শরীরের ছন্দ হারিয়ে যায়। যার কারণে আপনার শরীরে খাদ্য চাহিদা দিন দিন বাড়তেই থাকবে। বেশিরভাগ মানুষই মনে করে জিম করা অধিক কষ্টকর তাই তারা ভাবে যদি ব্যায়ামের মাধ্যমে মেদ কমানো যেত তাহলে ব্যায়াম করার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব হতো। মেদ কমানোর উপায় হিসেবে ব্যায়াম অন্যতম। ব্যায়াম করতে হলে অবশ্যই আপনাকে দুই পাশে ঘেষে মাথার ওপরে মাটিতে শোয়ানো থাকবে এবং পা মাটিতে শোয়ানো থাকবে। এরপরে আপনাকে শ্বাস নিতে নিতে উঠে বসতে হবে আর উঠার সময় তনুই দিয়ে মাটিতে ভর না দিয়ে হাত কানের পাশ দিয়ে মাথার ওপর উঠানো থাকবে এরপরে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে পায়ের আঙ্গুল শুতে চেষ্টা করুন।
আপনি যদি মেদ কমাতে চান তাহলে অবশ্যই ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ উপাদান আমাদের শরীরের সেই হরমোনটির ব্যালেন্স ঠিক রাখে যেটি শরীরের নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। আপনি যদি ওজন কমাতে চান তাহলে এর হাতিয়ার হিসেবে আপনাকে প্রচুর পানি পান করতে হবে। আমিষ বা প্রোটিন খেলে শরীরের জমে থাকা চর্বি কমে যায়। আর এই চর্বি শরীরকে শক্তি বা ক্যালোর যোগান দিয়ে থাকে
মেদ কমানোর উপায় হিসেবে আরো একটি পদ্ধতি হলো যাদের পেটের মেদ বেশি তাদের গরুর মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কিন্তু আমরা পেটে মেদ থাকার পরেও কুরবানীর সময় হলে গরুর মাংস খেতেই হয়। কিন্তু কিভাবে খাবেন চলুন এ সম্পর্কে একটু দেখে নিই। গরুর মাংস রান্না করার পূর্বে এর পরিমান ও স্বাস্থ্যবিধির প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। শরীরে ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। এই জন্য যাদের শরীরে মেদ রয়েছে তাদের উচিত মাংস রান্না করার পূর্বে অত্যাধিক চর্বিযুক্ত মাংস আলাদা করতে হবে এরপর রান্না করতে হবে। মাংস রান্নার সময় অতিরিক্ত তেল ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে বেশি ভাজাভাজা করা যাবে না। এবং এ সকল পদ্ধতি মানলে অবশ্যই মেদ কমানো সম্ভব।
মহিলাদের পেটের মেদ কমানোর উপায়
নারী কিংবা পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে পেট ও কোমরে জমে থাকা অতিরিক্ত মেদ খুবই চিন্তার একটি বিষয়। এটা যেমন দেখতে খারাপ লাগে ঠিক তেমনি শরীরে অনেক রোগের বাসা বাঁধতে পারে। আর এজন্য আজকে আমরা মহিলাদের পেটের মেদ কমানোর উপায় সম্পর্কে জানব। তার আগে জানব কিভাবে মেয়েদের পেটে মেদ জমে। মেদ প্রধানত নিম্নোক্ত উপায়ে হতে পারে যেমন-কষ্ট কাঠিন্য, মানসিক চাপ, হরমোনের পরিবর্তন, একনাগারে বসে থেকে কাজ করার অভ্যাস গড়ে তোলা, পেশী আলগা হয়ে যাওয়া, কম প্রোটিন খাওয়া, বেশি কার্বোহাইডেট খাওয়া।
এখন জানব মেদ কমানোর উপায়। আমরা প্রতিনিয়ত অতিরিক্ত মেদ আলা মানুষকে দেখতে পায় এবং একই সাথে দেখা যায় অতিরিক্ত মেদের কারণে তারা তাদের পছন্দের পোশাক পড়তে পারেনা। সাধারণত একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারীর প্রতিদিন এক হাজার ক্যালোরি খাবার গ্রহণ করে তার খাদ্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। মহিলাদের ক্ষেত্রে কোমরের মাপ সাধারণত ৮০ সেন্টিমিটার বা ৩১.৫ ইঞ্চি পর্যন্ত স্বাভাবিক হিসেবে ধরা হয়। কেউ যদি নিয়মিত ডায়েটিং কন্ট্রোলের মধ্যে রাখে তাহলে মেদ কমানো যায় তবে কেবল ডাইয়েটিং করলেই মেদ ভালো হবে না কারণ ডায়েটিং এর সাথে খাবারের মধ্যে থাকা কার্বোহাইড্রেট ও ভ্যাট জাতীয় জিনিস না খেয়ে বেশি করে প্রোটিন জাতীয় খাবার খেতে হবে তাহলেই সম্ভব।
আরো পড়ুনঃ যৌন রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার - ৭ টি যৌন রোগ থেকে সাবধান
এছাড়া নিয়মিত দৌড়ানোর মাধ্যমে পেটের মেদ কমানো যায়। শরীরকে ফিট রাখার জন্য দৌড়ানোর উপকারিতা ব্যাপক। আর এই দৌড়ানোর ফলে কেবল পেটের মেদ কমে না তার সাথে হার্ট কে ভালো রাখে। পেটের মেদ কমানোর আরেকটি কার্যকারী উপায় হলো সাইকেল চালানো। কেউ যদি নিয়মিত সাইকেল চালানোর অভ্যাস গড়ে তোলে তাহলে তার জন্য খুবই উপকার হবে। এছাড়া রয়েছে সাঁতার কাটা, পরিমাণ মত হাটা।
পেটের মেদ কমানোর সহজ ৫ ব্যায়াম
সাধারণত নারী পুরুষ নির্বিশেষে প্রত্যেকেরই পেটের মেদজনিত বিভিন্ন জটিলতাই রয়েছে। তবে শরীরে অন্য জায়গার তুলনায় পেটে অত্যাধিক মেদ জমে। কেউ যদি নিয়মিত ব্যায়াম করলে পেটের মেদ কমানো যাবে। পাশাপাশি খাদ্যভ্যাসে ও কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। ইতিপূর্বে মেদ কমানোর উপায় জেনেছি। তাহলে আর দেরি না করে চলুন পেটের মেদ কমানোর সহজ ব্যায়াম সম্পর্কে জেনে নি-
১. সিট আপ
২. লেগ রেইস
৩. সাঁতার কাটা
৪. দৌড়ানো বা হাটা
৫. পুশ আপ
৭ দিনে মেদ কমানোর উপায়
১ম দিন
প্রথম দিন আপনার ডায়েট প্ল্যান এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন। প্রথম দিন আপনাকে কেবলমাত্র ফল খেয়ে থাকতে হবে। তার জন্য সারাদিন যে কোন সময় যে কোন মুহূর্তে শুধু ফল খান। সব ফল খেতে পারবেন তবে একটি ফল ছাড়া আর সে ফলটি হল কলা। তবে ফল হিসাবে তরমুজ বেশি বেশি খাওয়া উচিত এতে করে পেট অনেকক্ষণ পর্যন্ত ভরা থাকে এবং আপনাকে অবশ্যই কমপক্ষে 8 থেকে 10 গ্লাস পানি পান করতে হবে। যখনই ক্ষুধা ভাব আসবে তখনই নানা ধরনের ফল ভাবেন এবং অবশ্যই পরিমাণমতো পানি পান করতে হবে।
২য় দিন
প্রথম দিন যেমন বিভিন্ন ধরনের ফলমূল খেয়েছেন ঠিক তেমনি দ্বিতীয় দিনে শুধু নানা ধরনের শাকসবজি খাবেন কাঁচা অথবা রান্না করা যে কোনোভাবেই খেতে পারবেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে রান্নার সময় অবশ্যই তেল ব্যবহার করবেন না সবজিতে তেল ব্যবহার করলে ওজন কমানোর উদ্দেশ্য টাই বিফলে চলে যাবে। সারাদিন শাকসবজি খাওয়ার ফলে অন্যান্য দিনের চেয়ে এই দিনে টয়লেটের ভাব বেশি আসে এবং টয়লেটে যাওয়া বেশি লাগতে পারে কিন্তু এর ফলে ডাইজেস্টিভ সিস্টেম পরিষ্কার হয়।
৩য় দিন
তৃতীয় দিন আপনাকে শাকসবজি এবং ফলমূল খেতে হবে এই দিন আপনি যেকোনো ধরনের শাকসবজি ও ফল ইচ্ছামত পেট ভরে খেতে পারবেন কিন্তু মনে রাখতে হবে এই খাবারের তালিকা থেকে কলা এবং আলু বাদ দিতে হবে। এছাড়া পরিমাণ মতো পানি পান করতে হবে
৪র্থ দিন
মেদ কমানোর উপায় হিসেবে চতুর্থ দিনে আপনাকে অবশ্যই কলা এবং দুধ ছাড়া অন্য কিছু খাওয়া যাবে না। সারা দিনে কমপক্ষে আপনাকে আট থেকে দশটি কলা এবং তিন গ্লাস দুধের বেশি খাওয়া যাবে না। এজন্য খুবই সতর্কমূলকভাবে খেতে হবে।
৫ম দিন
পঞ্চম দিনে প্রথমবারের মতো ভাত খেতে পারবেন। এক্ষেত্রে শুধু ভাত এবং তা এক কাপের বেশি খেতে পারবেন না। আপনাকে সারা দিনে ছয় সাতটি বড় সাইজের টমেটো খেয়েই পার করতে হবে। কিন্তু এই পঞ্চম দিনে এ সকল খাবার খাবার ফলে শরীরে ইউরিক এসিডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে তাই আপনাকে অবশ্যই কমপক্ষে ১২ থেকে ১৫ গ্লাস পর্যন্ত পানি পান করতে হবে।
৬ষ্ঠ দিন
এই দিনে ভাতের সাথে সবজিও খেতে পারবেন কিন্তু সবজি তেল ছাড়া রান্না হতে হবে। একই সাথে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করতে হবে
আরো পড়ুনঃ যৌনশক্তি বাড়ানোর প্রাকৃতিক উপায় - পুরুষের যৌন শক্তি বৃদ্ধির ১০ উপায়
৭ম দিন
ডায়েট প্ল্যানের শেষ দিনে সারাদিন যে কোন সবজি এবং দুপুরে এক কাপ ভাত খেতে পারবেন তবে এই দিনে বোনাস হিসাবে এসব খাবারের পাশাপাশি যে কোন ধরনের ফলের জুস বানিয়ে খেতে পারবেন। যেমন ধরেন জাম্বুরা, তরমুজ, কমলা, মালটা, আপেল ইত্যাদি। আর এই সাত দিন শেষে আপনি নিজেই লক্ষ্য করবেন তাহলে বুঝতে পারবেন আপনার শরীরে ৪/৫ কেজি ওজন কমে গেছে। একই সাথে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি ফলমূল পুষ্টিকর খাবার জন্য চেহারায় উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি এবং লাবণ্যময় হয়। তবে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে এ ডায়েট মাত্র সাত দিনের জন্য এর বেশি কেউ করতে যাবেন না তাহলে শরীরে উপকারের চেয়ে ক্ষতি হতে পারে।
মেদ কমানোর খাবার
পেটের মেদ কমানোর জন্য অনেক মানুষ অনেক রকমের খাবার খেয়ে থাকে কিন্তু সঠিক ফলাফল পাই না ইতিপূর্বেই আমরা মেদ কমানোর উপায় এবং মহিলাদের পেটের মেদ কমানোর উপায় সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা মেদ কমানোর কিছু খাবার সম্পর্কে জানব যেগুলো খেলে অবশ্যই আপনার পেটের মেদ কমবে। তাহলে চলুন পেটের মেদ কমানোর খাবার সমূহ গুলো কি জেনে নিই।
- পিপারমেন্ট
- পানি
- ডিম
- পিনাট বাটার
- শসা
- তরমুজ
- শাকসবজি
- সামুদ্রিক মাছ
- মটরসুটে
- প্রোটিন
- বাদাম
- আঁশযুক্ত খাবার
- মসলা
- সবুজ চা
- অলিভ অয়েল
মেদ কমানোর ঔষধ
১. অ্যাডিপোনিল
২. ডায়েটিল
৩. হ্যালাক্স
৪. ডেটক্সি স্লিম
৫. লোয়েট
৬. অরলিফিট
নিউ বাংলা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url