জাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

 

জাম বাংলাদেশের অতি প্রাচীন সুমিষ্ট ফল। আর এই জন্য একজন মানুষের জাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। জাম খেতে কেই না পছন্দ করে। জাম পছন্দ করে না এমন লোক খুবই কম রয়েছে। জাম এটি একটি গ্রীষ্মকালীন মৌসুমী ফল। আর তাই আজকে জাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব।

জাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

জাম প্রধানত জুন জুলাই আগস্ট মাসের মধ্যেই পাওয়া যায়। শুধু জাম ফল হিসাবেই খাওয়া হয় না জাম গাছের পাতা জাম গাছের ছাল বিচি বিভিন্ন ঔষধ বানিয়ে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে অনেক ধরনের আয়ুর্বেদিক ঔষধ তৈরি করার ক্ষেত্রে জামের ব্যবহার হয়ে থাকে।

পোস্ট সূচীপত্রঃ জাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

জামের পুষ্টিগুণ

জামের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি বিদ্যমান এবং জাম গরমের ফল। জাম খেতে সামান্য কস ভাব দেখা দেয়। তবে রোগের নিরাময়ের জন্য জামের ভেজস ঔষধি গুণ রয়েছে। জাম খাওয়ার ফলে রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। যাদের শরীরের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের রোগ প্রতিরোধে এটি বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। আর এই জন্য ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের জন্য জাম প্রয়োজনীয় ফল। কারণ জামে থাকা এন্টি ডায়াবেটিক প্রপার্টিজ এর কারণে রক্তের শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

আরো পড়ুনঃ আম খাওয়ার উপকারিতা - আম খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে জানুন

হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি ও মজবুত করে। কারণ জামে রয়েছে ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম, ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ উপাদান। আর তাই হাড় ক্ষয় রোধ প্রতিরোধের জন্য খাদ্য তালিকায় জাম রাখা উচিত। জন্ডিস ও এমোনিয়া নির্মময় করে জামের বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান গুলোর মধ্যে আয়রন একটি যাদের শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম তাদের জন্য এটি বেশ কার্যকরী। আর এই জন্য জামে থাকা আয়রন এমোনিয়া ও জন্ডিস নিরাময় করে এবং রক্তস্বল্পতা জনিত সমস্যায় যারা ভোগেন তাদের জন্য জাম খুব ভালো উপকারী। ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। হার্টের সুস্থতা বজায় রাখে এই জন্য জাম খাওয়া প্রয়োজন।

জাম খাওয়ার নিয়ম

বাংলাদেশ ছাড়াও জাম অন্যান্য দেশেও চাষ করা হয় যেমন ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও ইন্দোনেশিয়া। ইতিপূর্বেই আমরা জামের অনেক গুনাগুন সম্পর্কে জেনেছি এখন আমরা জাম খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানব।

জাম অথবা যে কোন ফল রাতে ঘুমানোর ২-৩ ঘন্টা আগে খাওয়া উচিত তাহলে হজম হতে কোন সমস্যা হয় না

ভরা পেটে খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে

জাম খাওয়ার আগে পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং জাম খাওয়ার পরে পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন

জামে থাকা প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি এবং ফাইবার সহ নানা উপাদানে ভরপুর তাই জাম নিয়মিত খাওয়া উচিত

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য জাম আরো বেশি কার্যকর

জাম খাওয়ার পরে দুধ,পনির, দই খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে

খালি পেটে জাম খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে কারণ এতে বদহজম অম্বল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে

জামের ঔষধি গুণ

আমরা অনেকেই জাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতার সম্পর্কে জানিনা। আর তাই আজকে সকল সংশয় দূর করে দেব ধৈর্য সহকারে এই পোস্টটি পড়তে থাকুন। জাম অতি অত্যন্ত ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল। জাম শুধু ফল হিসেবেই নয় এর বীজ ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। নিচে কয়েকটি ভেষজ দেওয়া হলঃ

আমরা অনেকেই জানিনা জামের উপকারিতা সম্পর্কে। জামের বীজের মধ্যে রয়েছে জাম্বোলিন নামে গ্লোকোসাইট। আর এই গ্লোকোসাইট স্টার্চকে শর্করাতে রূপান্তরের হাত থেকে বাঁচিয়ে থাকে। যা নারী-পুরুষের মেহরোগ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। কাঁচা জামের পেস্ট পেটের জন্য খুবই উপকারী। কারণ এতে পেটের রোগ খুব সহজেই সারিয়ে তোলা সম্ভব। যাদের অতিরিক্ত ক্ষুধা মন্দা বা কষ্টকাঠিন্যের সমস্যা থাকে তাহলে তারা গ্রামের আষাঢ় পানির মধ্যে সমপরিমাণে মিশিয়ে সকাল সন্ধ্যা কেন দ্রুত ফল পাওয়া যায়।

আরো পড়ুনঃ পেয়ারার উপকারিতা - রোগ উপশমে পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা

বর্তমান কিছু দেশে জাম দিয়ে বিশেষ ঔষধ তৈরি করছে যা ব্যবহারে চুল পাকা বন্ধ করা সম্ভব। এছাড়াও অনেক ক্ষেত্রে গলার সমস্যার জন্য জাম বেশ উপকারী। এজন্য আপনাকে জাম গাছের ফল পিসে পেস্ট করে তা পানির সাথে মিশিয়ে মাউথ ওয়াশ হিসাবে ব্যবহার করলে সহজেই গলা পরিষ্কার হবে এবং মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়ে মাড়ি শক্ত করবে। এজন্য জামের উপকারিতা অনেক বেশি।

জাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

জাম একটি সমষ্টি ও পুষ্টিকর খাবার জাম খাওয়ার মাধ্যমে শরীর সুস্থ ও সবল রাখতে সাহায্য করে। আর এজন্য সকলের জাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে রাখা ভালো। আর এই জন্য জাম খাওয়ার আগে অবশ্যই আপনাকে হালকা নাস্তা করতে হবে। জাম খেলে শরীর আর্দ্র রাখে কারণ জামে থাকা প্রচুর পরিমাণে মিনারেল এছাড়া ফসফরাস ও আয়োডিনের মত খনিজ পদার্থ একসঙ্গে থাকে।

জামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি১, লোহ যা শরীরের হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এছাড়া জাম ফলে রয়েছে এন্টি অক্সিডেন্ট যার কারণে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ রাখে ডায়াবেটিস রোগীদের। এবং জাম খাওয়ার ফলে শরীরে জন্ডিসের হাত থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। যাদের শরীরে আয়রনের অভাব রয়েছে জাম খাওয়ার ফলে আয়রনের ঘাটতি পূরণ হয়। এছাড়া শরীরে সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে মানব শরীরে শক্তি যোগায়।

জাম শরীরে ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে। কারণ জামে রয়েছে ম্যালিক এসিড, গালিক অ্যাসিড, অক্সালিক এসিড, যা শরীরের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে বড় ভূমিকা পালন করে। যা মানুষের পরিপাকতন্ত্রে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখে, নানা রোগের সংক্রমণের হাত থেকে মুক্তি করে।

আরো পড়ুনঃ নারিকেলের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

আর তাই আমাদের জাম খাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে এবং জাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অবগত থাকা আমাদের প্রয়োজন। জামে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ আর সি রয়েছে এবং এতে থাকা বিভিন্ন মিনারেল যা আমাদের চোখ এবং ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। রোগীদের জন্য জামের রস বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। নিয়মিত জামের রস খেলে মূত্রথলি ভালো থাকে। জাম উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগ এবং স্ট্রোক্স থেকে রক্ষা করে।

জামের অপকারিতা/জাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

যা মানুষের শরীরের হাড় শক্ত ও মজবুত করে ঠিক তেমনি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে থাকে। জামে থাকা ভিটামিন বি১, অ্যামাইনো এসিড, ম্যালিক এসিড, ভিটামিন বি২, ফাইবার, লৌহ, এলজিনিক অ্যাসিড থাকে। যার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীর সুস্থ রাখে। এছাড়া জাম, জাম গাছের পাতা, জাম গাছের ছাল সবকিছু মানব শরীরের জন্য উপকারী আর এই জন্য জাম খাওয়ার কোন অপকারিতা নেই।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নিউ বাংলা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url