আম খাওয়ার উপকারিতা - আম খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
প্রিয় পাঠক, আপনি কি আম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি ঠিক জায়গায় এসেছেন আজকের এই পোস্ট জুড়ে আম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানানো হবে। আম খেতে কে না ভালোবাসে। কিন্তু আমরা আম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানিনা। আম একটি সিজোনাল ফল।
মানুষের মুখরোচক ফল হিসাবে আম অন্যতম প্রধান ফল। আম কাঁচা অথবা পাকা দুই অবস্থায় খাওয়া হয়ে থাকে। যদিও আম গ্রীষ্মকালীন ফল তাই পাকা আমের শরবত বাণীও খাওয়া হয়। স্বাদের দিক থেকে কাঁচা অবস্থায় টক ও পাকা অবস্থায় সুমিষ্টি হয়। চলুন দেরি না করে আম খাওয়ার উপকারিতা জেনে নেই।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ আম খাওয়ার উপকারিতা - আম খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
আম খাওয়ার উপকারিতা
আম কাঁচা হোক কিংবা পাকা দুই অবস্থাতেই আম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। আমরা অনেকেই আছি অত্যাধিক গরম সহ্য না করতে পেরে আম খাওয়া থেকে বিরত থাকি। কিন্তু আমরা এটা জানি না আম খাওয়ার উপকারিতা কি প্রতিনিয়ত পরিমাণ মতো আম খাওয়ার ফলে শরীরের বিভিন্ন পুষ্টি লাভ করা যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক আম খাওয়ার উপকারিতা কি কি
আরো পড়ুনঃ মসুর ডাল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় - মসুর ডালের উপকারিতা ২০২৩
- হ জমে সহায়ক হিসেবে কাজ করে আম। একটি পি বায়োটিক ফল, আর তাই এটি আমাদের পাকস্থলীর বিভিন্ন গাট ব্যাকটেরিয়ার জন্য উপকারী। আর তাই এটি হজম ক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
- ঘুমের সহায়ক হিসেবে ও কাজ করে। কারণ আমি রয়েছে টিপটোফ্যান, মেলাটোনিন, ও ম্যাগনেসিয়াম যা একজন মানুষের শরীরে ঘুমকে ত্বরান্বিত করে। এছাড়াও অনিদ্রা দূর করে
- ক্যান্সারের প্রতিরোধে আমের ভূমিকা অপরিসীম। কারণ আমি রয়েছে প্রায় ২০ এর অধিক ভিটামিন ও মিনারেল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা আমকে সুপারফুড হিসেবেও বেশ পরিচিত। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে আমের মধ্যে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট স্তন ও কোলন ক্যান্সারে ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে আমের বড় ভূমিকা থাকে। আম বিটা ক্যারোটিন, আলফা ক্যারোটিন এবং ভিটামিন এ এর ভালো উৎসব।
- আম খাওয়ার উপকারিতা হিসেবে ওজন কমাতে ও সাহায্য করে। আমের মধ্যে উপস্থিত বায়ো এক্টিভ এবং ফাইটোকেমিক্যাল নামক উপাদান শরীরের ফ্যাট সেল ও ফ্যাট রিলেটেড জিনের বৃদ্ধি ও বিকাশে অন্যতম ভূমিকা রাখে। যার কারণে খুব সহজেই শরীরের ওজন ও মেদ বাড়ে না। আর এজন্যই শরীরে ওজন কমায়।
- ত্বক ও চুলের যত্নে আম ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
- আম খাওয়ার উপকারিতা এর মধ্যে একটি হচ্ছে আমের পুষ্টি উপাদান। পাকা আমের আশেঁ কিছু উপাদান রয়েছে যেমন ভিটামিন মিনারেল এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ থাকায় তা হজমে সহায়তা করে থাকে।
আম খাওয়ার অপকারিতা
বর্তমান সময় আমের মৌসুম। এখন আমের সময় আম খেতে ছোট বড় সকলেই পছন্দ করে। আমি আছি প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি ও ভিটামিন যার শরীরের জন্য খুবই উপযোগী। তবে আপনি কি জানেন অতিরিক্ত খেলেই হবে না অতিরিক্ত আম খাওয়ার ফলে আম খাওয়ার অপকারিতা ও রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে অতিরিক্ত আম খাওয়ার ফলে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। চলুন জেনে নিয়ে আম খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে-
অতিরিক্ত আম খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিস, ওজন বেড়ে যাওয়া বদহজম সহ পেট ব্যথা ইত্যাদি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এছাড়াও আমি কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে যেমনঃ আমে প্রাকৃতিক চিনির পরিমাণ একটু বেশি তাই এটি ডায়াবেটিস সহ আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। তাই ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তির উচিত হবে অল্প পরিমাণে আম খাওয়া বা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী মেনে চলা।
আমের মধ্যে ইউরিশিয়াল নামক একটি রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে। আর এই রাসায়নিক অনেকের শরীরে এলার্জির সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এবং এর ফলে চর্মরোগ দেখা দেয়। এছাড়া বিশেষ করে কেউ যদি সিন্থেটিক উপাদানের প্রতি সংবেদনশীল হয়। কারণ আমি প্রোটিন ল্যাটেক্রের এর মত উপাদান রয়েছে যার এলার্জি আছে এমন কারো জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে আম।
আরো পড়ুনঃ দাঁত ব্যথা কেন হয় - পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায়
রক্তে শর্করার বৃদ্ধি করে আম। মিষ্টি এবং সুস্বাদু এই ফলে উচ্চপ্রাকৃতিক চিনি থাকার কারণে এটি দ্রুত চিনির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। আর তাই যেসব ব্যক্তি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের ডক্টরি পরামর্শ অনুযায়ী আম খাওয়া উচিত। তাহলে আমরা খুব সহজেই আম খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে কিছু নিয়ম জানতে পারলাম। এবার আমরা পাকা আমের উপকারিতা সম্পর্কে জানব। এবং জানব পাকা আম শরীরের কি কি উপকার করে।
পাকা আমের উপকারিতা
সময়টা এখন চলে এই এসেছে আমের মৌসুম। আর এই সময়ে আম হল মানুষের অন্যতম রসালো সুমিষ্টি ফল। আর তাই আমাদের শরীরে নানাভাবে উপকার করে থাকে। আজ আমরা পাকা আমের উপকারিতা সম্পর্কে জানব।
১. পাকা আমাদের ত্বককে সুন্দর উজ্জ্বল ও মসৃণ করে। এছাড়াও এটি আমাদের ত্বকের ভেতর ও বাইরে উভয়ভাবে সুন্দর রাখতে সাহায্য করে, এবং লোমের গোড়া পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে ও ব্রণের মতো সমস্যার সমাধানে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
২. পাকা আমে প্রায় 25 রকমের বিভিন্ন কেরাটিনোইডস উপকারী ব্যাকটেরিয়া আছে যা আপনার ইমিউন সিস্টেমকে সুস্থ সবল রাখতে সাহায্য করে।
৩. আমের মধ্যে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনার শরীরের ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
৪. আম শরীরের ক্ষয় রোধ করে। নিয়মিত আমখাওয়ার ফলে দেহের খয় রোধ এবং শিথিলতা কমিয়ে শারীরিক গঠনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে সক্ষম।
৫. আমি প্রচুর পরিমাণে এসিড রয়েছে যেমনঃ টারটরিক এ্যাসিড, ম্যালিক এ্যাসিড, সাইটিক অ্যাসিড যা আপনার শরীরে অ্যালকাইল ধরে রাখতে সাহায্য করে।
৬. কোলেস্টরের মাত্রা বজায় রাখে
৭. পাকা আমি ক্যারোটিনের মাত্রা সবচেয়ে বেশি থাকে। প্রতি 100 গ্রাম আমি ২৭৪০ মাইক্রো গ্রাম ক্যারোটিন রয়েছে। এছাড়া ১.৩ গ্রাম আয়রন ১৪ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ১৬ মিলিগ্রাম ফসফরাস ১৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি ১৬.৯ মিলিগ্রাম রয়েছে।
৮. দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে পাকা আম খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৯. মনোযোগ ও স্মৃতি বাড়াতে সাহায্য করে।
কাঁচা আমের উপকারিতা
প্রচন্ড গরম থেকে বাঁচতে অনেকেই কাঁচা আমের শরবত করে খায়। অনেকে আবার কাঁচা আম লবণ মরিচ দিয়ে মাখিয়ে খায়। আর তাই কাঁচা আমের উপকারিতা অনেক। কিছু কিছু মানুষ আমকে তরকারি হিসেবে ও রান্না করে এবং ডাউলে ব্যবহার করে। কাঁচা আম শুধু স্বাদেই নয় স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। পাকা আমের মতো কাঁচা আমের উপকারিতা রয়েছে। কাঁচা আম হৃৎপিণ্ড সুস্থ রাখে কারণ কাঁচা আমে ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম বিদ্যমান। আর এই দুটি উপাদান রক্ত প্রবাহ ঠিক রাখার পাশাপাশি হৃদপিণ্ড ও সুস্থ রাখে।
প্রখর রোদ থেকে বাঁচতে কাঁচা আম খুবই কার্যকরী ভূমিকা রাখে। আর এই গরমে শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় রেখে হিটস্ট্রোক থেকে রক্ষা করে কাঁচা আম। কাঁচা আম লিভারের পিত্ত উৎপাদনে সহায়তা করে। কাঁচা আমের থাকা প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা মুখের নানা রকম ক্ষত নিরাময়ে সহায়তা করে। স্কাইভি ও মাড়ি থেকে রক্তপাতের মত সমস্যাই কাজে আসতে পারে এই কাঁচা আম। এসিডিটি, কষ্টকাঠিন্য, এছাড়া বদ হজমের সমস্যা কমাতে বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে কাঁচা আম।
আরো পড়ুনঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
ঘামাচি দূর করে কাঁচা আম। গরমের সময় ঘামাচির সমস্যা দেখা দেয় অধিকাংশ মানুষের তবে কাঁচা আম খাওয়ার ফলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সহজেই সম্ভব। কারন কাঁচা আমের থাকা কিছু কার্যকরী উপাদান যা ঘামাচি থেকে বাঁচতে সাহায্য করে। চোখ ভালো রাখতে কাঁচা আমের উপকারিতা অনেক বেশি, কারণ কাঁচা আমের থাকা ভিটামিন এ চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও এতে থাকা লুটেইন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখের রেটিনা ভালো রাখতে বড় ভূমিকা রাখে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে কাঁচা আম। কাঁচা আমের থাকা ভিটামিন সি ভিটামিন ই ও একাধিক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকার কারণে রক্তে শ্বেত কণিকার কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে ও দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
কাঁচা আমের শরবত
প্রচন্ড গরমের হাত থেকে বাঁচতে একটু স্বস্তি পেতে অনেকেই কাঁচা আমের শরবত বা জুস বানিয়ে থাকে। এছাড়াও অনেকে ইফতারের সময় কাঁচা আমের শরবত খেয়ে থাকে। কারণ কাঁচা আমের শরবত খাওয়ার ফলে যেমনি শরীরের তৃপ্তি জোগাবে ঠিক পুষ্টিও মেটাবে। আপনি চাইলে নিজে নিজেই কাঁচা আমের শরবত তৈরি করতে পারবেন তার জন্য আপনাকে প্রথমে তিন থেকে চারটি আম নিতে হবে এবং আমের সাথে প্রয়োজন মত পানি, এক চা চামচ লবণ, 5 থেকে 6 টা কাঁচা মরিচ, এবং প্রয়োজনমতো চিনি এরপরে এগুলো একসাথে ব্যালেন্ডারের ভিতর দিয়ে মিশিয়ে নিতে হবে এবং ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। কিছুক্ষণ রেখে দেওয়ার পরে শরবত খেতে পারবেন। তাহলে খুব সহজেই জানতে পারলেন যে কিভাবে কাঁচা আমের শরবত তৈরি করা যায়।
নিউ বাংলা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url