নারিকেলের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
নারিকেল আমরা সকলেই খেতে ভালবাসি। নারিকেল একটি সুস্বাদু ফল। তবে নারিকেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আমিষ। নারিকেলের উপকারিতা ব্যাপক। আর তাই আজকে আমরা নারিকেলের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। শুধু নারিকেল স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় না এর পাশাপাশি কিছু ঔষধি গুনাগুন ধরে রাখে। তাই নারিকেলের উপকারিতা সম্পর্কে জানা উচিত।
নারিকেলকে কাঁচা অবস্থায় ডাব হিসেবে ধরা হয় এবং এই ডাবের পানি অত্যন্ত সুমিষ্টি এবং নানা পুষ্টিগুনে ভরপুর। আর পাকা অবস্থায় নারিকেলকে ঝুনা নারিকেল বলা হয়। বিশ্বের প্রায় সব দেশেই নারিকেল খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। বাংলাদেশে প্রায় সব জায়গাতেই নারিকেল গাছ জন্মে।
নারিকেলের উপকারিতা
নিয়মিত নারিকেলের পানি খেলে কিডনি রোগ সমস্যা দূর হয়। নারিকেলের উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। নারিকেল শরীরের শক্তি বাড়ায় এবং কাজের প্রতি উদ্দীপনা জায়গাতে সহায়তা করে থাকে। আপনার শরীরে হজম প্রতিক্রিয়ায় সহায়তা করে এবং বিভিন্ন ভিটামিন মিনারেল ও অ্যামাইনো এসিড শোষণ করে নিতে সাহায্য করে থাকে। নারিকেল খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণে বড় ভূমিকা পালন করে এছাড়াও দাঁত ও হাড় গঠনে সাহায্য করে।
নারিকেল খাওয়ার ফলে দাঁতের ক্ষয় রোধ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। এছাড়া নারিকেল থাইরয়েড হরমোনের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। নিয়মিত নারকেল খাওয়ার ফলে ত্বক কোমল ও সুন্দর হয় এছাড়াও নিয়মিত নারকেল খেলে ত্বকে সহজে বয়স জড়িত বলিরেখা পড়ে না। নারকেল খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে নারকেল ওজন কমিয়ে থাকে। নারিকেলের উপকারিতা বলে শেষ করা সম্ভব নয় কারণ নারিকেলে থাকা পর্যাপ্ত খাদ্য আসক কষ্টকাঠিন্য রোগীদের জন্য ভালো কাজ করে।
জলবসন্ত ও হামের দানা দূর করতে নারিকেলের পানি বড় ভূমিকা পালন করে। নারিকেলে থাকা অর্গানিক আয়োডিন সাধারণ গলগন্ড রোগ প্রতিরোধ করে। খালি পেটে নারকেল খেলে নাক দিয়ে রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যায়। গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন ৫০ গ্রাম নারিকেল খাওয়া সন্তানের জন্য অত্যন্ত ভালো এতে সন্তানের গায়ের রং ফর্সা হয়ে থাকে। আপনি চাইলে রাতে খাবার পরে আধা গ্লাস নারীকেলের পানি পান করতে পারেন কারণ এতে ঘুম ভালো হয়। এছাড়াও চুলের খুশকি দূর করতে নারিকেল তেলের বেশ কদর রয়েছে। ন্যাচারাল পার্সোনাল লুব্রিকেট হিসেবে ব্যবহার করা যায় এটি এবং এটি নরমাল vaginal ফ্লোরাকে ডিসট্রাব করে না। আর তাই এটি ব্যবহার করা সেফ।
নারিকেলের উপকারিতা হিসাবে আরো বলা যায় যে যদি কারো কোন স্থানে হালকা পুড়ে যায় তাহলে অনেকক্ষণ পানি দিয়ে ধুয়ে সেই পোড়া জায়গায় নারিকেল তেল লাগালে তার জ্বালাপোড়া কমে যায়। ডাবের পানি শরীরের মুত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে থাকে। ত্বক পরিষ্কার করতে বা ত্বকের যে কোন দাগ দূর করতে নারিকেল এর বেশ কদর রয়েছে। প্রচন্ড দাপদাহের কারণে জনজীবন যখন অতিষ্ঠ তখন ডাবের পানি শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। পেশীর বাধা প্রতিরোধ করে নারিকেল। নারিকেলের পানি পটাশিয়াম সমৃদ্ধ যা আমাদের পেশীর বাধাকে মুক্ত করতে সাহায্য করে থাকে। তাই পেশীর যেকোনো সমস্যা হলে নারিকেলের পানি পান করলে এই সমস্যা দূর হতে সাহায্য করে। তাহলে আমরা বুঝতে পারলাম নারিকেলের উপকারিতা কি এবং কোন কোন কাজে নারিকেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে, এবার আমরা নারিকেলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানব।
নারিকেলের পুষ্টিগুণ
নারিকেলের শ্বাসে প্রচুর পরিমাণে আমিষ, তথা চর্বি, শর্করা ও ক্যালরি, এবং ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। এছাড়া ডাবের পানিতে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান রয়েছে।
নারিকেলের ঔষধি গুন
বিভিন্ন রকম পেটের গোলযোগে গ্লুকোজ লাইনের বিকল্প হিসেবে ডাবের পানি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। কারো যদি ঘন ঘন পাতলা পায়খানা ও বমির ফলে দেহে যে পরিমাণ পানির অভাব ঘটে তা পূরণের জন্য ডাবের পানি অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এটি পিত্ত নাশক এবং কৃমিনাশক। ফলের মালা/আইচা পুড়িয়ে পাথর পাটটি চাপা দিয়ে পাথরের গায়ে যে গাম হয় তা দাদের জন্য মহা ঔষধ। এবার আমরা নারিকেলের ব্যবহার সম্পর্কে জানব
নারিকেল গাছের ব্যবহার
খাদ্য পানীয় থেকে শুরু করে গৃহ নির্মাণ সরঞ্জাম নারিকেল গাছ থেকে পাওয়া যায়। নারিকেল তেল খুব পরিচিত একটি ভালো তেল। আর এই তেল দুইভাবে ব্যবহার করা হয়। আর তা হলো যেটি রিফাইন্ড হয়ে আসে সেটি আমরা বাহিক্য ব্যবহার করি। আর যেটি আনরিফাইন্ড ভার্জিন তেল হিসেবে থাকে সেটা কি আমরা খাবার তেল হিসেবে ব্যবহার করে থাকি। নারিকেলের উপকারিতা এর পাশাপাশি হিসাবে নারিকেল তেলের বেশ কিছু গুনাগুন সম্পর্কে জানব।
ড্যামেজ চুল রিপেয়ার করতে নারিকেল তেলের জুড়ি মেলা ভার। এটি ন্যাচারাল কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে থাকে। তবে এটি বেসিক লোশন হিসেবেও কাজ করা যায়। চোখের মেকআপ তুলতে এটি ব্যবহার করা যায় এবং একটি তুলোয় তেল নিয়ে চোখের মেকআপ ঘষে তোলা সম্ভব। গর্ভাবস্থায় পেটের চামড়া ফেটে গিয়ে দাগ হয়, আর এই দাগ তুলার জন্য নিয়মিত নারিকেল তেল পেটে মালিশ করলে দাগ দূর করা সম্ভব। যৌনাঙ্গ ইস্ট বা ইস্ট ইনফেকশন হলে ওই জায়গায় বাহির্যভাবে নারিকেল তেল লাগালে খুব সহজেই উপকার পাওয়া সম্ভব। এছাড়া ম্যাসেজ এর জন্য তেল হিসেবে নারিকেল তেল খুবই জনপ্রিয়।
পায়ে ফাঙ্গাস ঘটিত কোন ঘা হলে সেখানে নারিকেল তেল দিলে তা ফাঙ্গাসের মোকাবেলা করে প্রতিহত করতে সক্ষম হয়। প্রাকৃতিকভাবে উকুন দূর করতে ব্যবহার করা যায় নারিকেল তেল। আর এই জন্য আপনার লাগবে তা হল আপেল সিডর ভিনেগার ও নারিকেল তেল। প্রথমে ভিনেগার পুরো মাথায় ঢেলে মাথাটি ভিজিয়ে নিতে হবে কিন্তু এরপর এটা ধোয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এবং মাথাতে ভিনেগার না শুকানো পর্যন্ত রেখে দিতে হবে। এরপর ভিনিগার শুকানোর পরে নারিকেল তেল লাগিয়ে শাওয়ার কাপ বা একটি পাতলা পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মাথা মুড়ে রাখুন। কয়েক ঘণ্টার পর একটি চিকন চিরুনি দিয়ে মাথা আচড়াতে হবে এতে করে উকুন ও ডিম বের হয়ে আসবে এরপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে।
ন্যাচারাল এন্টি ব্যাকটেরিয়াল স্কিন ক্রিম হিসেবে এটি ব্যবহার করা সম্ভব। ন্যাচারাল সেভিং ক্রিম এবং আফটার সেভিং ক্রিম হিসেবে এটি ব্যবহার করা যায় বিশেষ করে প্রাইভেট পাটে। এছাড়াও শিশুদের শরীর মালিশের জন্য এটি খুবই ব্যবহৃত তেল। নিয়মিত মাথায় মেসেজ করলে চুলের গ্রোথ ভালো হয়। তাহলে আমরা নারীকেলের উপকারিতা অনেক জানতে পারলাম এবং এর পুষ্টিগুণ ঔষধি গুন সমস্ত কিছু এই পোস্ট জুড়ে আলোচনা করা হলো। এমন নতুন নতুন পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন, এবং আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ।
নিউ বাংলা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url