পেয়ারার উপকারিতা - রোগ উপশমে পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা
ফল খেতে আমরা কেইনা ভালোবাসি। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ পেয়ারাতে রয়েছে স্বাস্থ্য উপকারিতা। আর তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পেয়ারা রাখতে পারেন। আমাদের দেশে কম বেশি প্রায় সব ধরনের ফল হয়ে থাকে। আর তাই আজকে আমি আপনাদের মাঝে পেয়ারার উপকারিতা ওপেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা কি এবং কেন পেয়ারা খাবেন তা নিয়ে এই পোস্ট জুড়ে আলোচনা করব।
আমাদের বাংলাদেশে পেয়ারা সব অঞ্চলেই হয়ে থাকে। কারো বাড়ির আঙিনায় বাসার ছাদে পেয়ারার গাছ লাগানো হয়ে থাকে। আমাদের দেশে পেয়ারার দাম সাধ্যের মধ্যে থাকার কারণে সকলেই পেয়ারা খেয়ে থাকে। চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক পেয়ারার সকল উপকারিতা।
পেয়ারার উপকারিতা
পেয়ারা প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। এছাড়া ও অন্যান্য সাইট্রাসফল যেমনঃ কমলালেবুর তুলনায় পেয়ারার মধ্যে পাঁচটা গুণেরও বেশি ভিটামিন সি রয়েছে। পেয়ারায় রয়েছে 180 মিলিগ্রাম ভিটামিন সি জাতীয় উপাদান। পেয়ারায় ভিটামিন এ ও ভিটামিন বি কমপ্লেক্স থাকে। এবং যথেষ্ট পরিমাণে বিটা ক্যারোটিনও রয়েছে। আর তার সাথে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ফলিক এসিড, নিকোটিনিক এসিড ইত্যাদি।
আরো পড়ুনঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
পেয়ারা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য খুবই উপকারী এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। পেয়ারা চোখ ভালো রাখতে এবং ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। পেয়ারায় যে আঁশ আছে, তা আপনার শরীরের চিনি শোষণ কমাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। আর তাই আপনি চাইলে নিয়মিত পেয়ারা খেলে টাইপ-2 ডায়াবেটিসের ঝুকি কমবে। ডায়েরিয়ার বিরুদ্ধে লড়তে পেয়ারা ভালো কাজ করে। পেয়ারা খাওয়ার ফলে ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়। এছাড়াও পেয়ারাতে রয়েছে নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা।
পেয়ারার উপকারিতা হিসাবে আপনার শরীরে রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখে। এবং আপনার শরীরে কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণ রাখে। এছাড়াও পেয়ারার উপকারিতা হিসেবে বলা যায় যে পেয়ারা খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে ওজন কমাতে সাহায্য করবে। এবং পেয়ারা আপনার শরীরের জ্বর, সর্দি-কাশি কষ্টকাঠিন্য ও আমাসয়সহ পেটের নানা অসুখ সারাতে খুব ভালো কাজ করে।
পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে পেয়ারা খাওয়া যেতে পারে কারণ, অনেকেই পিরিয়ড চলাকালে পেটের তীব্র ব্যথা হয় এবং প্রতিকার হিসাবে ওষুধ সেবন করতে হয়। কিন্তু আপনার যদি জানা থাকে তাহলে ঘরোয়া ভাবে পিরিয়ড চলাকালে ব্যথা হলে পেয়ারার পাতা চিবিয়ে বা রস খান তাহলে আপনার পিরিয়ডের ব্যথা খুব দ্রুতই কমে যাবে। আর এজন্যই পেয়ারার উপকারিতা অনেক ক্ষেত্রেই বেশি। পেয়ারা চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়ায়।প্রিয় বন্ধুরা আমরা জানতে পারলাম পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা। এবার আমরা জানবো পেয়ারার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে।
পেয়ারার পুষ্টিগুণ
একটি পরিপূর্ণ পেয়ারাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল (১০০ গ্রাম), ক্যালরি 7, ভিটামিন-এ ২৫০ আই ইউ, থিয়ামিন ০.০৭ গ্রাম, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি ৩০২, ক্যালসিয়াম ৩০ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ২৯ মিলিগ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১৭.১ গ্রাম প্রোটিন ১ গ্রাম, এছাড়া প্রচুর পরিমাণে পানি রয়েছে। পেয়ার এতে আরো রয়েছে, ফাইবার, ভিটামিন কে, প্রোটিন ও খনিজ পদার্থ। তবে পেয়ারাতে সবচেয়ে বেশি ভিটামিন সি রয়েছে।
আরো পড়ুনঃ আম খাওয়ার উপকারিতা - আম খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
বিভিন্ন গবেষকদের মতে, একটি পেয়ারায় যে পরিমাণ পুষ্টিগুণ রয়েছে তা পাঁচটির বেশি কমলালেবুর সমান। এবং চারটি আপেল একটি পেয়ারার সমান। তাহলে আমরা খুব সহজে বুঝতে পারলাম যে পেয়ারার উপকারিতা এবং পেয়ারার পুষ্টিগুণ কেমন। পেয়ারা খাওয়ার ফলে ভিটামিন সি এর কারণে মুখ গহবর এবং দাঁত ও মাড়ি ভালো রাখে। এতক্ষণ আমরা পেয়ারার উপকারিতা এবং পেয়ারার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানতে পারলাম। এবার আমরা শরীরে রোগ উপশমে পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানব।
রোগ উপশমে পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা
আমরা ইতিপূর্বেই জানতে পেরেছি পেয়ারার উপকারিতা সমূহ গুলো কি এবং পেয়ারা কেন আমাদের জীবনের জন্য অতি প্রয়োজনীয়। যাদের শরীরে হাই ব্লাডপ্রেসার রয়েছে তাদের শরীরে হাই ব্লাডপ্রেশার নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে পেয়ারা। রক্ত সঞ্চালন রাখতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে পেয়ারা। আর তাই যাদের হার্টের সমস্যা রয়েছে তারা পেয়ারা খেতে পারেন। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে পেয়ারা। পেয়ারায় উপস্থিত হিসাবে কাজ করে থাকে তাই হার্টের অসুখ প্রতিরোধ করে থাকে। অ্যাজমা, স্কাইভি, ওবিটিসি নানা ধরনের অসুখের ক্ষেত্রে পেয়ারার উপকারিতা রয়েছে।
আরো পড়ুনঃ কিসমিসের উপকারিতা - কিসমিস খাওয়ার নিয়ম ২০২৩
এবং নানার রোগ উপশমে পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা কি তা আমরা আস্তে আস্তে জানতে পারছি। পেয়ারা পাতার জুস গ্যাস্ট্রনটেস্টিনাল সমস্যায় উপকারী। আর তার কারণ হলোঃ পেয়ারা পাতার মধ্যে রয়েছে শক্তিশালী এন্টিঅক্সিডেন্ট। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ পেয়ারা আপনার ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করতে সাহায্য করে। এবং একই কারণে অনেক বডি লোশন বা ফেস ক্রিমের উপাদানে পেয়ারার কার্যকরী ভূমিকা রয়েছে। বয়সের সাথে নানা রোগ হয়ে থাকে যেমনঃ অ্যালজাইমার, ছানি, মাদার রিউম্যাটয়েড, আর্থ্রাইটিস প্রতিরোধ করে থাকে।
এছাড়া আপনার শরীরে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান সমৃদ্ধ পেয়ারার ডিসেন্ট্রী প্রতিরোধ করে থাকে। প্রিয় বন্ধুরা আজকে আমরা পেয়ারার উপকারিতা রোগ উপশমে পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা এবং পেয়ারার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানলাম। এমন নতুন নতুন পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন এবং আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ
নিউ বাংলা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url