মসুর ডাল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় - মসুর ডালের উপকারিতা ২০২৩
প্রিয় পাঠক আপনি কি মসুরডাল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। মানুষ নানা উপায়ে মুখের ত্বক ফর্সা করে থাকে। কিন্তু অনেকেই জানেনা যে কিভাবে মসুর ডাল দিয়ে ফর্সা হওয়ার যাই। মানুষের মুখের ত্বক অত্যন্ত সেনসিটিভ এবং নরম জায়গা। অনেক সময় ব্রণ, কালো দাগ, চামড়া মরা, এবং ত্বক শুষ্ক হওয়া ইত্যাদি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
আর এজন্যই আজকে আমি আপনাদের মাঝে মসুর ডাল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানাবো। মানুষের মুখের ত্বক সুন্দর রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের ফেসপ্যাক ব্যবহার করে থাকে। ঘরোয়া ভাবে মুখের ত্বক ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব তাই আর দেরি না করে চলুন জেনে নেই মসুর ডাল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সমূহ কি।
পোস্ট সূচিপত্রঃ মসুর ডাল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় - মসুর ডালের উপকারিতা ২০২৩
- মসুর ডাল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
- মসুর ডালের উপকারিতা
- মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা
- ব্রণের দাগ দূর করতে মসুর ডাল
মসুর ডাল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
মুখের যত্ন সকলেই নিতে পছন্দ করেন। কারন মুখের ত্বক হল সৌন্দর্যের রাজধানী, আর এজন্যই মানুষ মুখের ত্বকের ব্যাপারে অধিক যত্নশীল। রূপচর্চার জন্য মসুরের ডাল অতুলনীয় কারণ, মসুর ডালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, আন্টি অক্সিডেন্ট, কার্বোহাইডেট, ওমেগা, এসিড, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, এবং ভিটামিন কে। আর তাই নিয়মিত মসুর ডালের ফেসপ্যাক ব্যবহার করলে ত্বক সুন্দর ও ত্বকের রুক্ষতা দূর হয়। উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত ত্বকের জন্য মসুর ডাল গুড়া করে বিভিন্ন উপাদানের সঙ্গে মিশিয়ে নানা প্রকার ফেসপ্যাক তৈরি করা যায়।
মসুর ডাল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সমূহর নিম্নরূপ নিচে দেওয়া হলঃ
মসুর ডাল বেসন ও দই
প্রথমে একটা চামচ মসুর ডাল গুড়ার সঙ্গে তার সমপরিমাণ বেসন এবং দই মিশিয়ে নিতে হবে। আপনি চাইলে সামান্য পরিমাণ হলুদ মিশাতে পারেন। এবং এই মিশ্রণটি ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। এরপর ত্বকে লাগানো মসুরের ফেসপ্যাক শুকিয়ে গেলে সুন্দর করে ঘষে পরিষ্কার করে ফেলুন। এইভাবে কিছুদিন ব্যবহারের ফলে আপনার কার্যকারী ফলাফল পেয়ে যাবেন।
মসুর ডাল ও মধু
ত্বকের শুষ্কতা রক্ষতা দূর করার জন্য এই ফেসপ্যাকটি অন্যতম। আর এই ফেসপ্যাকটি করার জন্য প্রথমে আপনাকে এক চা চামচ মসুর ডালের গুড়ার সঙ্গে সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে নিতে হবে। এরপরে মিশানো ফেসপ্যাকটি ত্বকে লাগিয়ে দিন। এর কিছুক্ষণ পরে কুসুম কুসুম গরম পানিতে মুখটি ধুয়ে নিন, তাহলে আপনি আপনার কার্যকারী ফল পেয়ে যাবেন।
আরো পড়ুনঃ দাঁত ব্যথা কেন হয় - পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায়
প্রিয় পাঠকগণ আমরা এতক্ষন মসুর ডাল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে ছিলাম এমন আরো কিছু উপায় রয়েছে যেগুলো নিম্নে বর্ণনা করা হলো চলুন দেখে নেওয়া যাক আরো কি কি পদ্ধতি অবলম্বন করে মসুর ডাল দিয়ে ফর্সা হওয়া সম্ভব।
মসুর ডাল, কাঁচা দুধ, হলুদ
প্রথমেই আপনাকে জিডি করতে হবে আপনি এক চা চামচ মসুর ডাল গুড়া সাথে এক চা চামচ কাঁচা দুধ এবং এক চিমটি হলুদ গুঁড়ো একটি পাত্রে নিয়ে সমপরিমাণ ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এর মিশানো উপাদানটি ভালোভাবে আপনার মুখে লাগিয়ে দিন এবং শুকিয়ে না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। আস্তে আস্তে শুকিয়ে আসা ফেসপ্যাকটি ত্বক থেকে আলতো করে ঘোষে এবং পানি দিয়ে পরিষ্কার করে মশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে এবং এই পদ্ধতি অবলম্বন করার ফলে আপনার ত্বক ফর্সা উজ্জ্বল ও লাবণ্যময় দেখাবে।
মসুর ডালের উপকারিতা
মসুর ডাল বাংলাদেশের প্রধান এবং অন্যতম খাদ্যশস্যের একটি। মসুর ডাল না হলে ভাত খেতে পারে না আমাদের দেশে এমন মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। বাঙ্গালীদের রান্না ঘরের অন্যতম সুপরিচিত একটি খাদ্য উপাদান হল মসুর ডাল। আর তাই মসুর ডাল দিয়ে তৈরি করা হয় নানা রকমের পুষ্টিকর ও মুখরোচক খাবার। মসুর ডালের উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। মসুর ডালকে প্রোটিনের আধার বলে আখ্যায়িত করা হয় কারণ এটি মাংসের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হয়। মসুর ডাল শুধু স্বাদেই নয় এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি। যেমন খনিজ পদার্থ, আঁশ, খাদ্য শক্তি, আমিষ, ক্যালসিয়াম, লৌহ শর্করা ইত্যাদি।
আরো পড়ুনঃ গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা - গর্ভবতী মায়ের নয় মাসের খাবার তালিকা ২০২৩
এছাড়াও মসুর ডালের উপকারিতা রয়েছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায় যে নিয়মিত মসুর ডালের মত উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলে শরীরে হাটের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। মসুর ডালে উচ্চ মাত্রার একটি দ্রবনীয় ফাইবার থাকে যা রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। মসুরের ডালের ফাইবারের আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে। মসুর ডালে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য আস থাকে। ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে, হৃদযন্ত্র সচল রাখতে এবং কোলেস্টেরল কমায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে, হজমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, দাঁত এবং হাড়ের সুরক্ষা দিয়ে থাকে, সর্বশেষ মানসিক বিকাশেও মসুর ডালের উপকারিতা রয়েছে। তাহলে আমরা জানতে পারলাম মসুর ডাল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় ও ও মসুর ডালের উপকারিতা সম্পর্কে। এবার আমরা জানবো মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা বাড়ানোর উপায়।
মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা
অতি প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ রূপচর্চার জন্য মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা করে আসছে। আর তাই সেই প্রাচীনকাল থেকে এখন পর্যন্ত রূপচর্চার কাজে ও ত্বক পরিষ্কারের জন্য মসুর ডাল ব্যবহার করে আসছে। মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা অনেক ভালো হয়। মসুর ডাল দিয়ে অতি সহজেই ত্বক পরিষ্কার এবং ঝকঝকে ফর্সা হয়ে যায়। আর তাই আপনিও চাইলে ঘরোয়া পদ্ধতিতে মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা করতে পারেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক ঘরোয়াভাবে মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা করার কৌশল
১. প্রথমে আপনাকে একটা চামচ মসুর ডাল বাটা এবং একটা চামচ চালের গুড়া ও এক চামচ কফি পাউডার খুব ভালো করে কাঁচা দুধের সঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে এবং মেশানো উপাদানটি আপনার মুখে কিছুক্ষণ লাগিয়ে রাখুন এর পরে শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন তাহলেই আপনার কাঙ্খিত ফলাফল পেয়ে যাবেন।
২. আর একটি মজার পদ্ধতি হলো মসুর ডালের গোড়ার সঙ্গে এক চা চামচ কমলালেবুর খোসা গুঁড়ো করে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে, এরপর এর মধ্যে প্রয়োজন মত কাঁচা দুধ এবং বেসন দিয়ে খুব ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপরে মিশ্রিত উপাদানটি ভালো করে মুখে লাগিয়ে দিতে হবে এর কিছুক্ষণ যাবার পরে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলার পরে দেখা যাবে ত্বক ঝকঝকে পরিষ্কার ও ফর্সা হয়ে গেছে।
আরো পড়ুনঃ কাঁচা পেঁপে খাওয়ার নিয়ম - পাকা পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা ২০২৩
৩. এছাড়াও আপনি চাইলে আরেকটি পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন সেটি হলঃ মসুর ডাল বাটা এবং এর সঙ্গে পরিমাণ মতো এলোভেরা জেল ভালো করে মিশিয়ে এই মিশ্রিত উপাদানটি বেশ কিছুদিন ফ্রিজেও রাখতে পারেন তাহলে ভালো থাকবে। এই মিশ্রিত উপাদানটি রাত্রিবেলা শুতে যাওয়ার সময় মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে শুয়ে পড়তে হবে। এবং সকালে এটি পানি দিয়ে পরিষ্কার করলে দেখা যাবে বিশেষ ফলাফল পাওয়া গেছে।
ব্রণের দাগ দূর করতে মসুর ডাল
মসুর ডাল প্রোটিনে ভরপুর। মসুর ডাল স্বাস্থ্যের জন্য খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। শুধু মসুরের ডাল শরীরে পুষ্টির চাহিদায় মিটিয়ে থাকে না এর সাথে শরীরের ত্বকের চাহিদা ও পূরণ করে। আজকে আমি আপনাদেরকে জানাবো ভ্রনের দাগ দূর করতে মসুর ডাল কিভাবে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে সেই সম্পর্কে।
ব্রণের দাগ দূর করতে মসুরের ডাল যেভাবে আপনার ত্বকে ব্যবহার করবেন তার পদ্ধতি নিচে দেখানো হলোঃ
- প্রথমে আপনাকে দুই টেবিল চামচ ডাল একটি পাত্রে ভিজিয়ে রাখুন এবং সকালে মসুর ডাল বেটে পেস্ট করে ফেলুন।
- এরপরে এক টেবিল চামচ কমলার খোসা গুড়া করে নিন
- পেস্ট করা মসুর ডালের সঙ্গে কমলার খোসা গুড়া একসাথে মিশিয়ে এর সাথে তিন চা চামচ মধু একত্রিত করে সুন্দরভাবে পেস্ট করুন
- প্রয়োজন মত কাঁচা দুধ ভালো ভাবে মিশিয়ে পেস্ট বানান।
- তৈরি করা পেস্ট ভালোভাবে আপনার মুখের ত্বকে সুন্দর করে লাগিয়ে দিন। 15 থেকে 20 মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখুন।
- এর পরে যখন শুকিয়ে যাবে, কুসুম কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
- এভাবে নিয়মিত কিছুদিন ব্যবহার করার ফলে আপনার কাঙ্খিত ফলাফল পেয়ে যাবেন।
মসুর ডাল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় ছাড়াও আরো কিছু পদ্ধতির রয়েছে যা ত্বকে মসুরের ডাল কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। রোদে পোড়া দাগ দূর করতে মসুর ডাল ভালো কাজ করে এর জন্য আপনাকে যা করতে হবে। তা হলো মসুর ডালের গুড়ার সঙ্গে গোলাপ জল ও লেবুর রস মিশিয়ে ভালো করে পেস্ট তৈরি করতে হবে এবং তৈরি করা পেস্টটি পোড়া ত্বকে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে দিতে হবে এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। নিয়মিত ব্যবহার করার ফলে রোদে পোড়া কালচে দাগ দূর হতে সাহায্য করবে। প্রিয় পাঠক এবার আমরা জানবো মসুর ডাল দিয়ে চুলের যত্ন কিভাবে করা হয় সেই সম্পর্কে।
নিউ বাংলা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url