দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায় - দ্রুত মাসিক হওয়ার ঔষধ ২০২৩
প্রিয় পাঠক আপনি কে দীর্ঘদিন যাবত মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ নিয়ে ভাবছেন। তাহলে আর ভাবনা নয় আজকে আমি আপনাদেরকে মাসিক বা পিরিয়ড এর সকল দিক নিয়ে আলোচনা করব। এবং আপনাদেরকে জানাবো বন্ধ হয়ে থাকা মাসিক বা পিরিয়ড কিভাবে নিয়মিত করবেন তাহলে আর দেরি না করে চলুন জেনে নিয়ে যাক দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায় সমূহ গুলো
প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের হরমোনের প্রভাবে জরায়ু মধ্য দিয়ে রক্ত নিঃসৃত হয়ে যোনি পথে বের হয়ে আসে এবং এই বের হওয়া আসা রক্তকেই ঋতুচাপ বা মাসিক বলা হয়। একজন নারীকে প্রতিমাসে গর্ভধারণের জন্য প্রস্তুত করে, আর এই গর্ভধারণের প্রক্রিয়ার মাধ্যম হলো পিরিয়ড বা মাসিক।
পোস্ট সূচীপত্রঃ দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায় - দ্রুত মাসিক হওয়ার ঔষধ ২০২৩
- মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ
- দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায়
- পিরিয়ড বা মাসিক চলাকালীন ব্যায়াম
- দ্রুত মাসিক হওয়ার ঔষধ
- সহবাসের পর মাসিক না হলে করণীয়
মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ
আমরা জানি যে প্রতিটা নারীর গর্ভধারণের জন্য প্রাকৃতিকভাবে পিরিয়ড বা মাসিক হয়ে থাকে। প্রতিটা নারীর ক্ষেত্রে পিরিয়ড বা মাসিক হয়ে থাকে। 12 থেকে 45 বছর বয়সি নারীদের প্রজনন কাল। এবং প্রতিমাসে একজন নারীর পিরিয়ড বা মাসিক হয়ে থাকে।একজন নারীর দেহে প্রতিমাসে পরিপূর্ণ ডিম্বাণু তৈরি হয়। কিন্তু এই ডিম্বাণু যদি শুক্রানুর সাথে মিলিত না হয় তাহলে জরারায়ুর কিছু অংশ রক্তের সাথে মিশে যোনিপথ দিয়ে বেরিয়ে আসে। প্রতিটা নারীর ২৮ থেকে ৩২ দিনের মধ্যে পিরিয়ড বা মাসিক হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ কলা চাষ পদ্ধতি - কলার বিভিন্ন জাত সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
মাসিক বন্ধ হওয়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। কখনো এটির স্বাভাবিক শারীরিক পরিবর্তন এর কারণে হতে পারে, কখনো শরীরের হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, বা জটিল রোগের প্রাথমিক উপসর্গ হতে পারে। যখন কোন নারীর নিয়মিত মাসিক বা রক্তপাত হয় তাহলে এর মানে হল ওই নারীর শরীরে ডিম্বাশয়, জরায়ু, হাইপোথ্যালামাস এবং পিটুইটারি গ্রন্থি খুবই ভালোভাবে কাজ করছে। অনেক সময় এইসব অঙ্গ অস্বাভাবিক হতে পারে। চলুন মাসিক বন্ধ হওয়ার কারণ গুলো দেখেনি।
১. গর্ভাবস্থাঃ একজন নারীর গর্ভাবস্থায় মাসিক বন্ধ হয়ে যেতে পারে, তবে মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া এটি একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। এটা নিয়ে কোন চিন্তার কারণ নেই। যদি সব কিছু ঠিকঠাক থেকে থাকে তাহলে আপনি বুঝে নিবেন যে আপনি পেগনেন্ট। পেগনেন্ট এর কারনে অত্যাবশকীয়ভাবে মাসিক বা পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যায়।
২. হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়াঃ হঠাৎ করে অত্যাধিক ওজন কমে যাওয়ার কারণে অবিবাহিত মেয়েদের মাসিক বন্ধ হয়ে যায়। অতিরিক্ত ওজন কমে যাওয়ার ফলে একজন নারী যে পরিমাণে খাবার খায় তার তুলনায় প্রয়োজনীয় হরমোন পরিপূর্ণ হয় না যার কারণে পিরিয়ড বা মাসিক বন্ধ হয়।
৩. খুব বেশি ব্যায়াম করা
৪. অতিরিক্ত জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল খাওয়ার ফলে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে মাসিক বন্ধ হয়ে যায়।
৫. পুষ্টি ঘাটতির কারণে অনেক সময় মাসিক বন্ধ হয়ে যায়।
দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায়
অনেকে আছে যারা দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায় খুঁজতে গিয়ে নানাবিধ ওষুধ খেয়ে অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়ে এবং শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আপনি কি জানেন ওষুধ নয় বরং প্রাকৃতিকভাবে এই সমস্যার সমাধান পেতে পারেন। তাহলে আর দেরি না করে চলুন জেনে নেওয়া যাক দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায় সমূহ গুলো
১. পেঁপেঃ সঠিক সময় মাসিকের জন্য পেঁপে প্রাকৃতিকভাবে ঘরোয়া প্রতিষেধক বটে। কারণ আপনার শরীরে উপস্থিত ক্যারোটিন ইস্ট্রোজেন হরমোনকে প্রবাহিত করে। যার ফলে মাসিকের প্রারম্ভিক সময়কে প্রবাহিত করতে সক্ষম হয়। কাঁচা পেঁপে বা পেঁপের রস দিনে দুই থেকে তিনবার খাওয়া যেতে পারে, যাতে করে মাসিক বাধাগ্রস্থ থেকে মুক্তি পায়।
আরো পড়ুনঃ আর্টিকেল লেখার সেরা ৯ টি টেকনিক যা আপনার অবশ্যই জানা প্রয়োজন
২. ডুমুর ফলঃ যাদের পিরিয়ড বা মাসিকের সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে ভুগতেছেন তাদের জন্য ডুমুর ফল মহা ঔষধ বটে। ডুমুর ফলের সিদ্ধ করা পানি পান করলে দ্রুত সময়ে মাসিক শুরু হয়।
৩. আদা চাঃ আদা চা শরীরে ঋতুস্রাবে উৎসাহিত করে। কিন্তু একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে কেবল তারাই আদা চা পান করতে পারবে যাদের অতিরিক্ত দেরিতে মাসিক হয় কারণ আদা চা শরীরে অম্লত্বের মতো কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
৪. হলুদঃ দিনে দুইবার করে এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ হলুদ সিদ্ধ করে পান করুন। এতে করে ভালো উপকার দিবে।
এছাড়াও দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায় রয়েছে যেমনঃ কুমড়া, গুড়, কাজুবাদাম, আনারস, আঙ্গুর ইত্যাদি প্রতিনিয়ত এইসব খাবার খেলে এর জন্য নারীর দ্রুত মাসিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পিরিয়ড বা মাসিক চলাকালীন ব্যায়াম
পিরিয়ড বা মাসিক হওয়ার সময় বিভিন্ন ব্যায়াম করা যেতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে পিরিয়ডের আগে বা পরে নিয়ম মেনে নিয়মিত ব্যায়াম করলে শারীরিক ব্যায়াম কিছুটা কমে যায়। পিরিয়ড বা মাসিক চলাকালীন সময়ে ব্যায়াম করলে ইতিবাচক হরমোন উৎপাদনে সাহায্য করে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যারা শারীরিকভাবে দুর্বল তাদের জন্য এইসব ব্যায়াম এড়িয়ে চলাই ভালো।
পিরিয়ড বা মাসিক চলাকালীন সময়ে নিয়মিত ব্যায়াম করলে অনেক উপকার পাওয়া যায় যেমনঃ
- পেট ও কোমরের ব্যথা দূর হয়
- শরীরের ফোলাভাব কমে
- অল্পতেই মেজাজ খিটখিটে হয় না
- মানসিক ক্লান্তি দূর হয়ে মনের শান্তি বিরাজ করে
- বমি বমি ভাব দূর হয়
- ক্ষুধা মন্দ হয় না
- মাথা ব্যথা দূর হয়
পিরিয়ড বা মাসিক চলাকালীন সময়ে সহজ কিছু ব্যায়াম করা যেতে পারে। যেমনঃ সাইকেল চালানো, ডাম্বল ওঠা নামা করানো, ইয়োগা করা, স্বাভাবিক নিয়মে সাঁতার কাটা, ইত্যাদি
দ্রুত মাসিক হওয়ার ঔষধ
১২ থেকে ৫৫ বছর বয়সেই নারীদের পিরিয়ড বা মাসিক হয়ে থাকে। প্রাপ্তবয়স্ক একজন নারীর নিয়মিত মাসিক হওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। কিন্তু এই মাসিক বা পিরিয়ড নিয়মিত না হলে বুঝতে হবে শারীরিক কোন সমস্যা হয়েছে। প্রতিটা নারীর 28 থেকে 35 দিন অন্তর স্বাভাবিক ভাবে মাসিক হয়ে থাকে। অনেক সময় মাসিক দেরিতে হওয়া নিয়ে নারীদের মধ্যে চিন্তা বিরাজ করে। কিন্তু কেউ কি জানেন যে পিরিয়ড বা মাসিকের সঙ্গে কতগুলো ব্যাপার জড়িত থাকে।
পিরিয়ড দেরিতে হওয়ার পেছনে অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। এর মধ্যে কিছু কারণ হলো গর্ভাবস্থা, বয়স, মানসিক চাপ অকাল গর্ভপাত, এবং হরমোন জনিত কিছু সমস্যা অন্যতম। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে এই সমস্যা গুলোর মধ্যে আপনি একটিও দেখতে পাচ্ছেন না তাহলে অতিসত্বর অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। আজ আমি আপনাদেরকে জানাবো দ্রুত মাসিক হওয়ার ওষুধ এবং ওষুধের নাম চলুন জেনে নেওয়া যাক।
আরো পড়ুনঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
তবে একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যে ওষুধ সেবন বা কৃত্রিম উপায়ে মাসিক ঘটানো এটি কোন স্থায়ী সমাধান হতে পারে না। কিন্তু আপনি যদি একেবারেই কোন উপায় না পেয়ে থাকেন তাহলে মাসিক হওয়ার জন্য বিশেষ কোনো ঔষধ ব্যবহার করতে পারবেন। ওষুধসমূহগুলো হল
1.Normens
2.Ethinor
3.Feminor
4.Menoral
5.Mensil-N
6.Remens
7.Menogia
সহবাসের পর মাসিক না হলে করণীয়
বিয়ের পর সহবাসের সময় পিরিয়ড বা মাসিক না হলে অনেক নারীরাই চিন্তিত থাকেন। কারণ হাজবেন্ড যদি সন্তান নিতে চাই তাহলে শারীরিক মিলনের ফলে পিরিয়ড বা মাসিক না হলে দুশ্চিন্তায় ভোগে, কেননা অনেক সময় নির্ধারিত সময়ে পিরিয়ড বা মাসিক না হলে ধরে নাই সে প্রেগনেন্ট। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় যে অনাকাঙ্খিতভাবে ও নিয়মিত পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যায়।
তাই সহবাস বা মিলনের ফলে অনেক সময় পিরিয়ড বা মাসিক বন্ধ হয়ে যায় এটা দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই চলুন জেনে নেওয়া যাক এর স্থায়ী ও সমাধান। সহবাসের পর মাসিক বন্ধ না হলে করণীয় গুলো হলঃ সহবাসের পর যদি মাসিকের চক্র অর্থাৎ মাসিকের নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী আপনার পিরিয়ড বা মাসিক না হয় তাহলে সেক্ষেত্রে আপনি পেগনেন্ট কিনা সেটা কনফার্ম করে দেখতে পারেন।
সাধারণত আপনি চাইলে সহবাসে 21 দিন পরে একবার প্রেগন্যান্সির টেস্ট করতে পারেন তবে এ সময় রেজাল্ট ১০০% কনফার্ম নাও হতে পারে। এরপরে সবার থেকে মোটামুটি ১৪ থেকে ২০ দিন পর প্রেগনেন্সি টেস্ট করলে আপনি বুঝতে পারবেন আপনি প্রেগন্যান্ট হয়েছেন কিনা! এরপরে আপনার টেস্ট অনুযায়ী একজন গাইনোলজিস্ট এর কাছে পরামর্শ নিতে পারেন এবং আপনি যদি মনে করেন ভুলবশত বা অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে প্রেগন্যান্ট হয়েছেন তাহলে আপনি এখন কি করতে চান সে বিষয়ে গাইনোলজিস্ট কে বলুন এবং তার সঠিক পরামর্শ নিন। সবসময় একটি বিষয় মনে রাখবেন সহবাসের পর মাসিক না হলে এর মানে যে আপনি কনফার্ম প্রেগন্যান্ট বিষয়টা এমন নয়।
প্রিয় পাঠকগণ এতক্ষণে আমার নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছি যে দ্রুত মাসিক হওয়ার উপায় কি এবং দ্রুত মাসিক হওয়ার ওষুধ এছাড়াও সহবাসের পর মাসিক না হলে করণীয় কি তার সকল বিষয়।
নিউ বাংলা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url